দিপেনকে কট্টর ইষ্টবেঙ্গল সমর্থক হবার যোগ্য সন্মান দিলেন কল্যান বাবু


দিপেন কর্মকার, ২৪ বছর বয়েস, অপরাধ, ফেসবুকে মোহনবাগান শীর্ষকর্তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মোহনবাগান সমর্থকদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করে বলে ১৯৮০র ১৬ই আগস্ট ফিরিয়ে আনবে। রীতিমতো গর্হিত অপরাধ এবং মোহন কর্তারা স্বাভাবিক ভাবেই দিপেনের এই মন্তব্যকে ডার্বি হবার আগে যথাযথ গুরুত্ব বিচার করে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন,
যার ভিত্তিতে দিপেনকে পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার হতে হয় এবং পরে দিপেনের দিশেহারা মা রুনু কর্মকার ও দিপেন মোহনবাগান কর্তা ও সমর্থকদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন, দয়ালু দেবাসিশদা ও টুম্পাইদা দিপেনের বয়েস ও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এবং দিপেনের মায়ের আকুল কান্নাকে যথাযথ মর্যাদা দিয়ে দিপেন কর্মকারকে ক্ষমা করেন ও অভিযোগ ফিরিয়ে নেন।
গল্পটা এখানে শেষ হলেই ভালো হতো, কিন্তু হোল না, হোল না তখন যখন, বুকে বারুদ ক্লাবের সচিব প্রকাশ্য সাংবাদিক সন্মেলনে চিৎকার করে বলেন দিপেন আমাদের সমর্থকই নয়। বাহ কল্যান বাবু বাহ।
দিপেন কি আমাকে চেনে? না আপনাকে? ৫ই সেপ্টেম্বরের আগে পর্যন্ত ওর একটাই পরিচয় ছিল, ও লাল হলুদ আর ওর শত্রু সবুজ মেরুন। ফুটবলকে ঘিরে বাঙ্গালীর এই আবেগ চিরকালিন আর সনাতন, এর জন্য অনেক অপ্রীতিকর ঘটনার সন্মুখিন হলেও ঘটী বাঙাল তরজা বাঙালি আজো তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করে, কিন্তু শালিনতা বা সংযম অবশ্যই দরকার যেহেতু আমরা সামাজিক প্রাণী, এখানে দিপেন তার মন্তব্যে শালিনতার মাত্রাটা অতিক্রম করে গেছিলো বলে মোহন কর্তারা বাধ্য হয়ে প্রশাসনের কাছে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং পরবর্তী ঘটনা ঘটেছিলো, কিন্তু দিপেন তো অসামাজিক নয়? ও তো আপনাদের সমর্থক, বাচ্ছা ছেলে, একটা ভুল করেছিল, তার শাস্তিও তাকে পেতে হয়েছে, বাড়ী থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে তাকে পরিবার ও পাড়ার সবার সামনে থেকে, এটা কি তার এই অপরাধের শাস্তি নয়? যে ক্লাবকে সে মানশিক ভাবে শুধু অপছন্দই নয় বলা যেতে পারে ঘৃণা করতো সেই ক্লাবে সবার সামনে তাকে ক্ষমা চাইতে হোল, এটা তার শাস্তি নয়?
কিন্তু সব থেকে বড় শাস্তিতো তাকে আপনি দিলেন মাননীয় কল্যান বাবু। যে ক্লাব তার বেঁচে থাকার নিঃশ্বাস, ভালোবাসার প্রশ্বাস, সেই ক্লাবের বুক থেকে দিপেন কে উপড়ে ফেলে দিলেন কল্যান বাবু? বাহ ।
ক্লাব তো সব সময় পাশে দাঁড়ায়, ভুল করলে শাসন করে, কিন্তু ছেড়ে পালায় না, দায় ছেড়ে যায় না, মোহনবাগান মাঠে সেদিন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিলো, যখন পুলিশ মোহন সমর্থকদের উদ্দেশ্যে লাঠি নিয়ে তেড়ে যাচ্ছিলো, তখন টুটু বাবুর কথা শুনেছিলেন স্যার? মাইক নিয়ে ৭০ ঊর্ধ ভদ্রলোক পিতৃসুলভ পরিচয় দিয়ে মাইকে ঘোষণা করেছিলেন, "কেউ আমাদের সমর্থকদের গায়ে হাত দেবেন না"। পুলিশ ও শান্ত হয়ে গেছিলো। অতো বিশৃঙ্খলার মাঝেও একজন সমর্থকও আহত হয় নি।
দিপেন ওর ফেসবুক প্রোফাইল মনে হয় বন্ধ করে দিয়েছে, ও তো আমাদেরই মতো সমর্থক, ক্লাব ছাড়া কিছু জানে না। যে ক্লাবের জন্য হাজতবাস করলো সেই ক্লাবই যখন ওকে ছুঁড়ে ফেলে দিলো কি দরকার ওর ফেসবুক প্রোফাইলের? ওই দলের অন্য সমর্থকরাও ব্যাপারটা ভেবে দেখবেন

Share on Google Plus

About Web Master

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.

0 comments :

Post a Comment