একজন বনেদি বড়লোকের সঙ্গে, পাড়ার উঠতি প্রমোটারের যে তফাত থাকে, মোহনবাগানের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের সেই তফাত।
বনেদি ভদ্রলোক কোনও বড়লোকি চাল দেখান না। সাদা ধুতি পাঞ্জাবি পরে ঘুরেন। কিন্তু সবাই তাঁকে শ্রদ্ধা করে। অন্য দিকে উঠতি প্রমোটার চকরাবকরা জামা পরে, গলায় সাইকেলের চেনের মতো মোটা সোনার হার পরে, তীব্র গতিতে বাইক চড়ে ঘুরে বেড়ায়। ভাবে আমি বিরাট হনু। কিন্তু কেউ তাঁকে পাত্তাই দেয় না।
এই ভুঁইফোঁড় বড়লোকি চাল দেখা যায় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের আচরণে। তারা ভাবে পয়সার গরম দেখিয়ে মোহনবাগানের প্লেয়ার ভাঙিয়ে নেবে। তাই কথায় কথায় ব্ল্যাঙ্ক চেকের গল্প শোনায়। এর আগে বাবলুদাকে ব্ল্যাঙ্ক চেক দিতে গেছিল। কাজ হয়নি। এবার সোনিকে দিতে চেয়েছিল। তাতেও কাজ হল না। জেজেকে কোটি টাকা দিতে চেয়েছিল। জেজে কদিন লেজে খেলিয়ে বিদায় করে দিয়েছে।
আরে বাবা! প্লেয়াররা জানে, ভুঁইফোঁড় প্রমোটারের কথায় ভরসা করার থেকে বনেদি পরিবারকে ভরসা করা ভালো। কোনও প্লেয়ারকে নিজের দলে আনতে গেলে আন্তরিকতা লাগে। কোনও প্লেয়ারকে নিজের দলে ধরে রাখতে গেলে তাঁকে সম্মান দিতে হয়। মোহনবাগান বছরের পর বছর সেই সম্মান দেখিয়েছে। আন্তরিকতা দেখিয়েছে। তাই মোহনবাগান থেকে চুনি, মান্না, বাবলু, সত্যজিৎ, ব্যারেটো, সোনি কাউকেই ওরা নিতে পারেনি।
অথচ আমরা ওদের, কৃশানু, বিকাশ, বাইচুং, চিমা, টোলগে যাকে চেয়েছি টুসকি মেরে তুলে নিয়েছি। মনোরঞ্জন, তরুণের মতো ওদের ঘরের ছেলে যখন সম্মান পায়নি তখন আমরাই ওদের সম্মান দিয়েছি। আমাদের ঘরের ছেলেকে ওরা নিয়েছে এমন কোনও নজির নেই। থাকবে কি করে? ঘরের ছেলের কনসেপ্টটাই তো ওদের নেই।
শোন লোটা, দেখতে দেখতে তোদেরও ১০০ বছর হতে চলল। এবার একটু সম্ভ্রান্ত হয়ে ওঠার চেষ্টা কর। ভদ্রলোক হয়ে ওঠার চেষ্টা কর। কথায় কথায় আমাদের প্লেয়ারদের ব্ল্যাঙ্ক চেকের গরম না দেখিয়ে নিজেদের প্লেয়ারদের সম্মান দিতে শেখ। পাঁচ পয়সার প্রমোটারের ব্ল্যাঙ্ক চেককে কেউ ভরসা করে না।
0 comments :
Post a Comment